কক্সবাজারের উখিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম স্টেশন কোর্টবাজার। উপজেলার জালিয়াপালং, রত্নাপালং, হলদিয়াপালং ও রাজাপালং সহ মোট চারটি উপজেলার ইউনিয়নের মানুষ এই স্টেশনে আসে নিয়মিত। এছাড়া রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প থাকায় দেশি-বিদেশি এনজিও সংস্থার গাড়ির চলাচল তো আছেই।
কিন্তু সড়ক ও ফুটপাতের ওপর দোকান করায় এই স্টেশনে যানযট সমস্যা যেন নিত্যকার চিত্র। ফুটপাতের পাশাপাশি মুল সড়কের এক তৃতীয়াংশ এলাকা দখলে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। ফলে প্রশস্ত সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে মানুষের বিড়ম্বনা বেড়েছে পদে পদে। সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের।
রাস্তার ওপরে চুলা বসিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভাপা পিঠা, পেঁয়াজু-শিঙাড়া-পুরি সহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবার।
বিক্রি হচ্ছে আপেল, কমলাসহ নানা ধরনের ফল। রয়েছে বাদাম ও কাপড় বিক্রির দোকান। রাস্তার প্রায় এক তৃতীয়াংশ জুড়ে বসেছে এসব দোকানপাট। ফলে হেটে চলাচলের সময়ও ভোগান্তি পোহাচ্ছেন পথচারীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফুটপাত দিয়েও হাঁটা যায় না। রাস্তা দিয়েও হাঁটা যায় না। কে কিভাবে করবে এর প্রতিকার। তিনি বলেন সড়কের ওপর দোকান বসানোর কারণে নিয়মিত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে জরুরি রোগী নিতেও এম্বুলেন্স আটকে যায় জ্যামে। এছাড়া সড়কের ওপর গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আকবর নামের এক পথচারী বলেন, রাস্তায় দেকান বসানোর কারণে অসংখ্য মানুষ দোকানের চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকে, চলাচলে অসুবিধা হয় আমাদের। স্টেশনে বের হলে একটু হাঁটতেও সমস্যা হয়।
ফুটপাতের পান ব্যাবসায়ী আন্জু মিয়া জানান, দোকান বসায়ছি তাই লাইনম্যানকে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে তারা গাড়ি পার্কিং করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফুটপাতে দোকান করা এক ব্যবসায়ী জানান, মার্কেটে সামনে রাস্তায় দোকান বসিয়েছি তাই মার্কেটের পরিচালককে টাকা দিতে হয় প্রতিমাসে।
এছাড়া ইজারাদারদের নিয়মিত টাকা দিতে হয়।
কোর্টবাজারের ইজারাদার মকবুল হোসাইন মিথুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে, যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ইজারাদারদের একাংশের দায়িত্ব থাকা ভুট্টো নামের এক ব্যবসায়ী নেতার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ইজারাদার মিথুনের নাম বলেন, তবে কোর্টবাজার স্টেশনকে কয়েক ভাগে বিভক্ত রে আলাদা করে কয়েকজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানান ভুট্টো। সড়কের টাকা তুলার দায়িত্বে তিনি আছেন বলে স্বীকার করলেও পরে অস্বীকার করেন তিনি।
কোর্টবাজার দোকান মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উখিয়া একটি রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা। তাই এখানে চাকরিজীবী সহ বিভিন্ন এনজিওর আনাগোনা। ফুটপাতে ও সড়কের ওপর দোকান বসানোর বিষয়টি আমরা দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে অতীতের সকল ইউএনওকে বলেছিলাম, তারা অভিযানও পরিচালনা করেছিলো। কিন্তু পরে এই দোকান আবার বসে যায়। শুধু দোকান নয় সড়কের ওপর যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের কারণেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সড়ক ও ফুটপাতের দোকান উচ্ছেদ করতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশন(ভুমি) যারীন তাজনিম তাসিন বলেন, ফুটপাত দখল,সড়কে ওপর দোকান ও যত্রতত্র পার্কিংয়ের বিষয়টি অবগত হয়েছি। অভিযান শুরু করলে কোর্টবাজার স্টেশনেও অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।
পাঠকের মতামত